প্রকাশিত: Wed, Dec 14, 2022 4:33 AM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 6:55 AM

দেশের নারীবাদ ও নারী অধিকার আন্দোলন

মুশফিক ওয়াদুদ

আমাদের সমাজে এখন ‘মিসোজিনিস্ট’ ট্যাগ অনেকেই ভয় পান। কাউকে মিসোজিনিস্ট বলে তাকে সমাজে স্টিগমাটাইজড করা যায়। এটা সমাজের 

একটি অগ্রগতি। কয়েক বছর আগেও হয়তো মিসোজিনিস্ট ট্যাগকে কেউ ভয় পেতেন না। অগ্রগতি এই অর্থে যে মানুষের মধ্যে নারী বিদ্বেষের মতো ভয়ংকর একটি মানসিক রোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। তবে বাংলাদেশের মতো একটি সমাজে এটি একটি ভয়েরও কারণ। ব্যক্তিগত মতপার্থক্য, কারো মতো পছন্দ না হলে মিসোজিনিস্ট না এমন মানুষদেরও ট্যাগ দেওয়ার প্রবণতার আঙ্ককা তৈরি হয়। অনেকটা হুজুরদের নাস্তিক ট্যাগ দেওয়ার মতো, কিংবা চেতনাবাদীদের রাজাকার/মৌলবাদী ট্যাগ দেওয়ার মতো। এভাবে ঘৃণা ছড়ানোর ঘটনায় আশঙ্কাও তৈরি হয়। মিসোজিনিস্ট নিয়ে সচেতনতাকে আমি বাংলাদেশের আধুনিক নারী আন্দোলনের সফলতা দেখি। বিশেষভাবে স্যোশাল মিডিয়ায়  তাঁদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। 

তবে এই একটি ক্ষেত্র ছাড়া বাংলাদেশে নারীবাদী আন্দোলন একটি ব্যর্থ আন্দোলন বলে আমার কাছে মনে হয়। অনেকে হয়তো প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, কিন্তু সমাজে আসলে দেশের নারীবাদী আন্দোলন বিশ্বনারীবাদী আন্দোলনের মতো কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারে নাই। শিক্ষিত নারীরা রান্না বান্না করবেন নাÑ এমন ভাবনা থেকে অন্য একজন নারী (গৃহপরিচারিকার কাছে রান্না বান্নার সব দায়িত্ব গিয়েছে)। পশ্চিমা সমাজের মতো পুরুষদের রান্না ঘরে নিতে পারে নাই। নিজেদের কাজ নিজে করতে বাধ্য করতে পারে নাই। কিংবা দেশে পাবলিক টান্সপোর্টে নারীরা যেভাবে হয়রানির শিকার হন, সেসব ক্ষেত্রে নারীবাদী আন্দোলনের কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারেন নাই। অথবা কন্যার পিতা মাতাদের ওপর ‘জামাই আদরের’ মতো অমানবিক একটি প্রথা সমাজে চালু আছে সেগুলোর বিলুপ্তি নিয়েও দেশের নারীবাদীদের তেমন কোনো সচেতনতা তৈরির চেষ্টা চোখে পরে না। এসব কঠিন কাজ। কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ায় কাউকে ট্যাগিং দেওয়া কঠিন না। লেখক ও গবেষক